The Taqwacores: পাঙ্ক, ইসলাম, অ্যাফিলিয়েশন, কন্ট্রাডিকশন
মাইকেল মুহাম্মাদ নাইট ও তাকওয়া-কোর টার্ম দুইটার সাথেই আমার পরিচয় হঠাৎ করেঃ তবে, আমি তার বইটা পড়িনি, যেটি থেকে তৈরি সিমিলারলি টাইটেল্ড The Taqwacores (২০১০)
তবে লেখার সময়ে তিনি তার বিশ্বাস নিয়ে সন্দীহান ছিলেন - এবং তার লেখাটি মূলতঃ তার ইসলামে নিজের ইন্টারপ্রেটেশন নিয়ে অভিযান (যা অনেকটা সূফিবাদ থেকে অনুপ্রাণিত)। ফিল্মটি তৈরি হয়েছে প্রায় ৭ বছর পরে, যেই কারণে ধারণা করা যায় যে তার পরবর্তী বিভিন্ন অভিজ্ঞতার মাধ্যমে নিজের সাথে কিছুটা সমতায় এসেছেন - যেই কারণে এই সিনেমাটিতে অনেক প্রশ্নের সাথে অনেক উত্তরও পাওয়া যায়, যা, বলা বাহুল্য, নাইটের নিজস্ব মতামত, কিন্তু তারপরও বলা যায় অনেকগুলো ইন্টেরেস্টিং প্রশ্ন তুলে ধরা হয়েছে।
যেমনঃ ইসলামে উইড/ধূমপান, সমকামিতা, ড্র্যাগ, নারী-পুরুষ একসাথে জামাআতে দাঁড়ানো, নারী ইমাম, ইত্যাদি। এবং অবশ্যই মিউজিক, মূলতঃ পাঙ্ক রক। সত্যি বলতে উত্তরের চেয়ে প্রশ্ন বেশি। বেশ স্বল্প-দৈর্ঘ্য, সেই হিসেবে প্রতিটি দৃশ্যেই কোন-না-কোন আইডিওলজিক্যাল ব্যাখ্যা থাকবে। এভাবে সিনেমাটির অ্যাস্থেটিক উপভোগ করার মতন সময় কমই পাওয়া যায়। শটে কিছু হ্যান্ডহেল্ড ও মাঝে মধ্যে কিছু কালো-সাদা ওয়েস্টার্ন ডকুমেন্টারি স্টাইলের মিশ্রণ। সেই সাথে হাই কন্ট্রাস্ট রঙে হয়তো পাঙ্ক/হার্ডরক মিউজিক ভিডিও ধাঁচের একটা ভাব আনা হয়েছে যেটা খুব খারাপ লাগেনি।
তবে সিনেমাটি মূলতঃ উঠে আসবে ইয়াদ যাহ্রা-এর ডিরেকশনের জন্য না, বরং নাইটের চরিত্র ও ডায়ালগের জন্য। পাঙ্ক-রকের শক ফ্যাক্টর এখানে তার অনুপ্রেরণা ছিল, তা বলা বাহুল্য। তবে নতুন জেনারেশনের মুসলিম তরুণরা এখানে রিলেট করার কিছু বিষয় পেতে পারে, যেই কারণে বইটি তাদের মধ্যে জনপ্রিয় হয়েছিল। যেমনঃ পড়াশোনার বিষয়ের ক্ষেত্রে বাবা-মার পছন্দকে নিজের পছন্দের উপর প্রাধান্য দেওয়া। কিছু কিছু বিষয় পুরোপুরি ওয়েস্টার্ন বলা যায়ঃ যেমন তাদের হুকিং-আপ কালচার। তবে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় দেখেছি যা এখনো আন্ডারমাইন করা হয় - যেমন, সেক্স-এড, ইত্যাদি।
এর ফেমিনিস্ট কয়েকটি বিষয় মনে লেগেছেঃ বুরখা ও নিকাবকে খাঁচা হিসেবে না দেখে আইডেন্টিটি হিসেবে দেখা, বা কুরআনের কয়েকটি আয়াত যেগুলো লোকেরা এখনো ব্যবহার করে, প্রধানতঃ স্ত্রীদের মারধোর করা সংক্রান্ত বিষয়... তবে সত্যি বলতে সবকিছুকে তুলে আনা হয়েছে বেশ উগ্রভাবে - যেটা অনেকসময় 'অফেনসিভ' মনে হতে পারে। আবার ড্র্যাগ-সজ্জার কিছু কিছু বিষয় বেশ কন্ট্রোভার্শাল মনে হবে।
এর মাঝেও দুই-একটি স্পিরিচুয়াল বক্তব্য উঠে আসতে দেখা যায়। তবে, আল্টিমেটলি, সিনেমাটির মূল বক্তব্য পুরোপুরি সফল হয়নি। সিনেমাটিতে যেসব ব্যান্ডকে তাকওয়া-কোর হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে, তাদের প্রায় সবাই পরবর্তীতে নিজেদেরকে তাকওয়া-কোর লেবেলে অন্তর্ভুক্ত করতে চায়নি। এবং তিনিও এই বইটির বক্তব্য থেকে নিজেকে মুক্ত করতে চেয়েছেন পরবর্তীতে।
চরিত্রায়ণ বলতে গেলে তেমন নেই। এমনকি একটি চরিত্র যার মাধ্যমে গোঁড়া-ধার্মিক তরুণদেরকে তুলে ধরা হয়েছে, তাকেও শেষে কোন নির্দিষ্ট এক দিকে দেখা যায়না। সবচেয়ে চোখে পড়বে 'জাহাঙ্গির' চরিত্রে ডমিনিক রেইন্স ( A Girl Walks Home Alone At Night (২০১৪) ফেম-এর )। অন্যান্য চরিত্রগুলো তার মেসেজ-এর বিভিন্ন দিক প্রকাশ করে - কিন্তু আইডিওলজি ছাড়া চরিত্রগুলো আলাদা করে পছন্দ করার মত বা তাদের সাথে সিম্প্যাথাইজ করার মতন আমার ক্ষেত্রে হয়নি। বিশেষ করে প্রধান চরিত্র ইউসেফ, যার পার্সোনালিটি নির্দিষ্ট করে ঠিক করা যায়না, এবং বেশিরভাগ দৃশ্যেই তাকে কিছুটা 'অওকওয়ার্ড' লাগে, বিশেষ করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে তার আচরণ 'হঠাৎ' বা 'কারণহীন' লেগেছে।
সিনেমাটিতে নাইট পাঙ্ক ও ইসলাম দুইটির মধ্যেই সমাজ-বিচ্ছিন্নতা, রিভোলিউশন ইত্যাদি মনোভাবের একটা মিল খুঁজে পেয়েছেন যেটি পার্সোনালি আমার কাছে সবচেয়ে ভালো লেগেছে। এখানে যেসব প্রশ্ন করা হয়েছে, মূলতঃ আইডেন্টিটি বিষয়ক সেগুলো বলা যায় 'টিপ-অফ-দি-আইসবার্গ'। খুব বেশি ইন্টেরেস্টিং গল্প না কিছুটা চিন্তা করার মতন বিষয় নিয়ে কিছু দেখার ইচ্ছে হলে অবশ্যই সিনেমাটি দেখে ফেলা যায়। তবে বলতে হবে খুব বেশি গোঁড়া-ধার্মিক হলে সিনেমাটি না দেখাই ভালো।
Comments
Post a Comment